ক্রিপ্টোকারেন্সি কি এবং প্রকারভেদ | What is Cryptocurrency in Bengali

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি এবং প্রকারভেদ,সুবিধা,অসুবিধা

ক্রিপ্টোকারেন্সি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও বিশ্বজুড়ে এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে এবং ভারতেও ক্রিপ্টোকার্রেন্সি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে।ক্রিপ্টোকার্রেন্সি শুধুমাত্র online-এ উপলব্ধ হওয়ায়, একে Digital Currency বলা হয় এবং এটি আমরা physically কেনাবেচা করতে পারি না।

আপনি অর্থের অনেক রূপ দেখেছেন যেমন মুদ্রা, যেমন ভারতে রুপি, বাংলাদেশে টাকা ,আমেরিকায় ডলার, ব্রিটেনে পাউন্ড, ইউরোপে ইউরো ইত্যাদি সেই দেশগুলিতে ব্যবহার করা হয় । আপনি নিশ্চয়ই এই সমস্ত মুদ্রা কাগজের টুকরো আকারে দেখেছেন, এবং আপনি এটি আপনার হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারেন। আপনি পৃথিবীর যেখানেই যান না কেন, সেই জায়গার মুদ্রাই আপনাকে ব্যবহার করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে আজ ডিজিটাল পেমেন্টকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এই কারণে, এমন একটি ডিজিটাল মুদ্রার যুগ শুরু হয়েছে, যা আপনি দেখতে পারবেন না, স্পর্শ করতে পারবেন না, তবে এটি আজকের সময়ের সবচেয়ে মূল্যবান মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। সেই মুদ্রার নাম Bitcoin। এটি একটি বিশ্বব্যাপী Crypto Currency অর্থাৎ Digital Payments System।

ক্রিপ্টোকারেন্সি কি?

ক্রিপ্টোকারেন্সিকে এক ধরনের Digital Currency বলা হয়।এটি একটি Digital Asset ,যার ব্যবহার সাধারণত কোনো জিনিস কিনতে ব্যবহৃত হয়। এই কারেন্সীগুলিতে Cryptography এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এটি একটি Peer to Peer Electronic System নগদ System হিসাবে কাজ করে।এটি ইন্টারনেটের সাহায্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর সাহায্যে খুব সহজেই একে অপরকে টাকা Transfer করা যায়। এটি ব্যবহারের জন্য কোনো ব্যাংক বা অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কিছু লোকের মতে cryptocurrency ব্যবহার করে মাদক বিক্রিকারীরা এর মাধ্যমে টাকা লেনদেন শুরু করেছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সির ইতিহাস

2008 সালে এক রহস্যময়ী সাতোশি নাকামোতো নামের একটি লোক একটি crypto currency প্রকাশিত করেছিল যার নাম ছিল বিটকয়েন। একটি পিয়ার টু পিয়ার ইলেকট্রনিক ক্যাশ সিস্টেম। এবং 2009 সালে সাতোশি নাকামোটোর দ্বারা ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ ফাংশন এর ব্যবহার করে বিটকয়েন তৈরী করা হয়েছিল। বিটকইন সফ্টওয়্যার এই প্রথম বার সাধারণ লোকের জন্য উপলব্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বিট কয়েন এখন পর্যন্ত ট্রেড হিসাবে ব্যবহার করা হয়নি। ওই সময়ে কেউই বুঝতে পারছিল না যে এর নতুন করে কি দাম রাখা হবে।

Bitcoin এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে 2011 সালে আরও অন্য নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সী মার্কেটে আসতে লাগলো। এগুলিকে বিকল্প ক্রিপ্টোকারেন্সি বা altcoin বলা হয়ে থাকে।যেমন Namecoin ,Litecoin,এবং Peercoin ইত্যাদি। এইসব কয়েন গুলিতে বিটকয়েনের তুলনায় বেশি বৈশিষ্ট্য দেওয়ায় হয়েছে। 2021 সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট 8000 এর ক্রিপ্টো কারেন্সী বাজারে উপলব্ধ আছে। তাদের মধ্যে অনেক ক্রিপ্টো রয়েছে যার মূল্য অনেক কম। আবার কিছু কিছু ক্রিপ্টো কারেন্সী,যার মূল্য হাজার লাখ টাকায় রয়েছে। চীনের মতো কিছু দেশে ক্রিপ্টো নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যদিও এটি অনেক দেশে বৈধ। 2021 সালের জুনে, এল সালভাদর নামে একটি দেশ বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আইনি মর্যাদা দিয়েছে। এবং বর্তমানে এখন বিশ্বের প্রথম বিটকয়েন শহরটিও সেখানে নির্মিত হয়েছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সির প্রকারভেদ

এই মুহুর্তে প্রায় 1000টি ক্রিপ্টোকারেন্সি উপলব্ধ রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে কিছু cryptocurrency রয়েছে, যা প্রচুর ব্যবহৃত হয়। যাতে আপনারা টাকা Invest করতে পারেন।

1. Bitcoin (BTC)

যখনই ক্রিপ্টোকার্রেন্সির কথা ওঠে ,তখনই সবার প্রথমে Bitcoin এর কথা আসে।কারণ বিটকয়েনই পৃথিবীর প্রথম cryptocurrency,যা 2009 সালে Satoshi Nakamoto নামে এক ব্যাক্তি সর্বপ্রথম Bitcoin আবিষ্কার করেন।

সাধারণত Bitcoin একটি Digital Currency,যা কেবলমাত্র online-এ কেনাবেচা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এবং এটি একটি De-centrallized currency ,যার মানে এটি কোনো সরকার বা institution -এর অধীনাধও নয়। বর্তমানে একটি Bitcoin-এর মূল্য ভারতীয় টাকায় আনুমানিক ৩৩ লক্ষ টাকা।

2.Ethereum (ETH)

bitcoin এর মতোই Ethereum open-source, decentralized blockchain-based computing platform. Vitalik Buterin হলেন Ethereum এর আবিস্কারক। এই cryptocurrency-র Token -কে সংক্ষেপে ‘Ether’ বলা হয়ে থাকে। এটি Ethereum ব্লক চেইনের অধীনে লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

3. Litecoin (LTC)

Litecoin 2011 সালে Google Employee Charles Lee দ্বারা প্রথম উদ্ভাবিত হয়েছিল। এটিও decentralized peer-to-peer cryptocurrency,যা Open Source প্রযুক্তির সাহায্যেও কাজ করে। এর সাহায্যে, বিটকয়েন অনেক দ্রুত কাজ করে থাকে ।

Litecoin তৈরি হওয়ার পিছনে Bitcoin এর একটি বড় অবদান রয়েছে। এবং এর বেশিরভাগ feature অনেকটা Bitcoin এর সাথে মিল খায়। Litecoin এর block generation সময় বিটকয়েনের তুলনায় ৪ গুন্ কম লাগার কারণে এটি transaction খুব অল্প সময়ে সম্পূর্ণ করে ফেলে।

4Dogecoin (Doge)

Dogecoin তৈরী হওয়ার পিছনে একটি মজাদার ঘটনা রয়েছে।এটি বিটকয়েনের মজা করতে গিয়ে এই coin টি তৈরী করা হয়। যা পরে একটি Crypto Currency-এর রূপ লাভ করে।Dogecoin এর আবিস্কারক হলেন Billy Markus এবং Litecoin এর মতো Dogecoin -ও Scrypt Algorithm ব্যবহার করা হয়।

5. Polygon(Matic)

Polygon(Matic) হল একটি Layer 2 Scaling Solution (L2 Solution) যা Ethereum নেটওয়ার্কের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ Blockchain তৈরি করার জন্য একটি platfrom প্রদান করে। অর্থাৎ, আপনি Ethereum-এর মতই Polygon-এ Smart Contracts, DApps, NFT’s এবং আপনার নিজস্ব Blockchain তৈরি করতে পারেন, যার সাহায্যে আপনি Ethereum-এর নিরাপত্তা পাবেন।Ethereum যেখানে প্রতি সেকেন্ডে ১৫-৩০ transaction করতে পারে ,সেখানে Polygon প্রতি সেকেন্ডে 10,000 TPS transaction complete করতে পারে।

ক্রিপ্টোকারেন্সির সুবিধা

  • ক্রিপ্টোকারেন্সিতে জালিয়াতির সম্ভাবনা অনেকটা কম।
  • ক্রিপ্টোকারেন্সির যদি কথা হয় তাহলে স্বাভাবিক ডিজিটাল পেমেন্ট থেকে এটি বেশি নিরাপদ ।
  • যদি আমরা পেমেন্ট অপশনের কথা বলি তাহলে লেনদেনের ফিও অনেক কম আছে।
  • এখানে অ্যাকাউন্টটি সুরক্ষিত থাকে।

ক্রিপ্টোকারেন্সির অসুবিধা

এখন চলুন ক্রিপ্টোকারেন্সি-এর অসুবিধা সম্পর্কে জানি –

  • আপনার ক্রিপ্টোকার্রেন্সিতে এক বার লেনদেন সম্পূর্ণ হয়ে গেলে সেটিকে বাতিল করা অসম্ভব।
  • যদি আপনি আপনার wallet-এর ID হারিয়ে ফেলেন তাহলে সেটিকে পুনরায় ফিরে পাওয়া অসম্ভব।
  • এতে transection এর কোনো প্রমাণ থাকে না। এই কারণে বেশিরভাগ মাদক মাফিয়া, অস্ত্র চোরাচালান ও কালোবাজারি করা ব্যবসাইরা এতে transection করে থাকে।

What is Cryptocurrency in Bengali FAQ

ক্রিপ্টোকারেন্সি কাকে বলে?

ক্রিপ্টোকারেন্সিকে এক ধরনের Digital Currency বলা হয়।এটি একটি Digital Asset ,যার ব্যবহার সাধারণত কোনো জিনিস কিনতে ব্যবহৃত হয়। এই কারেন্সীগুলিতে Cryptography এর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।আরও পড়ুন

বিটকয়েন প্রথম কে ও কবে আবিষ্কার করেন?

2008 সালে এক রহস্যময়ী সাতোশি নাকামোতো নামের একটি ব্যক্তি একটি ক্রিপ্টো কার্রেন্সি প্রকাশিত করেছিল যার নাম ছিল বিটকয়েন।আরও পড়ুন

Share the article

Leave a comment